চুমরী বা চোমর (Chumri Ba Chomar)

যশোর-খুলনায় আজও শোনা যায় সেই গান- ‘ঠিলে ধুয়ে দে বউ গাছ কাটতি যাব/ খাজুর গাছে চোমর বারুইছে/ তোরে আইনে দেব/ সন্ধের রস ঝাড়ে আইনে / জাউ নান্দে খাব।’











 গ্রামের মানুষের ছোট ছোট দুঃখ সুখের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত রয়েছে আঞ্চলিক কথ্য ভাষা. মানুষের দুঃখ বেদনা বা আনন্দর বহিঃপ্রকাশ দেখা যায় অনেক আঞ্চলিক গানে  আজ এ রকমই একটা গান পোস্ট করছি যেটা বাংলাদেশের খুবই জনপ্রিয় গান .কিন্তু বর্তমানে সে রকম ভাবে এই গানটাও শোনা যায় না তাছাড়া এই শব্দগুলো বর্তমান প্রজন্মের কাছে অপরিচিতের মতো . আধুনিকতার করালগ্রাসে আজ হারিয়ে যেতে বসেছে খেজুর গাছ এবং খেজুর গাছের থেকে রস বা গুড়, পাটালি তৈরি. ‘ঠিলে ধুয়ে দে বউ গাছ কাটতি যাব/ খাজুর গাছে চোমর বারুইছে/ তোরে আইনে দেব/ সন্ধের রস ঝাড়ে আইনে / জাউ নান্দে খাব।’এই গানটির মধ্যে ছোট্ট একটা ভালবাসার গল্প লুকিয়ে রয়েছে, যেখানে  বিবাহিত আর্থিক অসঙ্গতিপূর্ণ স্বামী  সামান্য "চুমরী"  আনার  কথা বলে তার স্ত্রীকে তাড়াতাড়ি "ঠিলে" অর্থাৎ ভাড় ধুয়ে দিতে বলেছে .বলিউডের একটা সিনেমা সৌদাগার, এই সিনেমাতে এই খেজুর রস থেকে গুড়  তৈরীর ওপর একটা খুব সুন্দর ছবি রয়েছে. সাথে সাথে সেই সমস্ত মানুষের সুখ-দুঃখের কথা উঠে এসেছে এই ছবিটিতে .যদি সময় পান ছবিটা দেখে নিতে পারেন .এই  আঞ্চলিক গানের মধ্যে "ঠিলে" এই শব্দটি রস ধরার জন্য যে ভাড়  ব্যবহার করা তাকে বলা হয়েছে. খেজুর গাছের অপভ্রংশ শব্দ হচ্ছে "খাজুর". জাউ অর্থাৎ এখানে পায়েশের কথা বলা হয়েছে .এ বিষয়ে একটা খুব সুন্দর লেখা রয়েছে বেঙ্গল বার্তা রসকাহন  নামে লেখাটি রয়েছে .যদি পারেন লেখাটি পড়ে আসতে পারেন সেখানে যিনি লিখেছেন সাহিত্য গুণসম্পন্ন লেখা লিখেছেন. কিন্তু আমার সে মুরোদ নাই তাই চেষ্টা করেছি শব্দগুলো কে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার.

 এই চুমরী বা চোমর যখন প্রথম খেজুর গাছে বের হয় তখন নরম থাকে এবং সেটি খেতে বেশ ভালই লাগে .যিনি খেয়েছেন তিনি জানেন এটির বিষয়ে এখানে যে ছবি পোস্ট করা হচ্ছে সেটি খাওয়ার যোগ্য় নয় ,খাওয়ার যোগ্য় এর পূর্বাস্থায় .সেরকম ছবি না পাওয়ায় এই ছবি দেওয়া হয়েছে ছবি সংগ্রহ করে দিয়েছে সোমনাথ .

 চুমরী বা চোমর --

বি. নারকেল খেজুর প্রভৃতির নৌকাকৃতি পুষ্পকোষ; নারকেলের ফুল বা নবজাত ফলের আধার।
[তু. সং. চমর-তু. আঞ্চ. চুরী]।

Post a Comment

0 Comments