একটা সময় মা ঠাকুমাদের অবসর যাপনের অন্যতম মাধ্যম ছিল কাঁথা তৈরি । শুধু
তাই নয় এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতির ইতিহাস
।আমাদের অঞ্চলে কাঁথা "খ্যাতা" বলেই অধিক পরিচিত..বাংলাদেশের কাঁথা তৈরির ইতিহাস খুবই প্রাচীন ।এ বিষয়ে নকশী কাঁথার কথা
উল্লেখ করা যায় বিভিন্ন সাহিত্যেও এই কাথার কথা উল্লেখ রয়েছে। বর্তমানে
যান্ত্রিক সভ্যতা মানুষের অবসরকে গ্রাস করেছে ।মানুষ আর সেই রকম ভাবে তাদের
অবসর সময় কে কাঁথা তৈরিতে কাজে লাগায় না। বরঞ্চ সেই সময়টা তারা টিভি
সিরিয়াল নিয়েই বেশি ব্যস্ত থাকে। টিভি সিরিয়ালের কথা বলা এই কারণেই কারণ
কাঁথা তৈরি শিল্প টা মূলত মহিলা কেন্দ্রিক। এখন আর সেই রকম ভাবে
নকশীকাঁথার শিল্পী কে খুঁজে পাওয়া যায় না । তবে আমাদের অঞ্চলে কিছু কিছু
শিল্পী রয়েছেন যারা নকশী কাঁথা না হলেও হাতে তৈরি সুন্দর সুন্দর কাঁথা
তৈরি করেন । কাঁথা তৈরি মূলত হত কোন ছেঁড়াকাপড় কে বা ন্যাকড়া কে ফেলে না
দিয়ে সেটাকে আবার সেলাই করে ব্যবহার উপযোগী তৈরি করা ।এর সঙ্গে একটা
অর্থনৈতিক বিষয় জড়িত রয়েছে। কারণ মানুষের তখন অভাব ছিল, মানুষ কোন জিনিস
নষ্ট করতে চাইত না ।তাই যেকোন ছেড়া ন্যাকড়া না ফেলে দিয়ে সেটাকে সেলাই
করে কাঁথা তে রূপান্তরিত করে আবার পুনর্ব্যবহার করত। বর্তমানে মানুষের আগের
মত আর সেই অভাব নেই ।মানুষ আগের থেকে অনেক সচ্ছলতা ভোগ করে ।বিশেষ করে না
খেতে পাওয়া মতো পরিস্থিতি সংখ্যা খুবই কম ।সেটা বোঝা যায় মানুষের
বিনোদনের বহর দেখলে। টিম টিম করে জ্বলতে থাকা এই শিল্প কতদিন বেঁচে থাকে
উত্তাল ঝড়ের দাপটে সেটাই দেখার।
0 Comments